

আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কাঁচা রাস্তায়**
ভিজে বই, কাঁদে শিশু, থেমে যায় স্বপ্নের যাত্রা*
মো. আবু বক্কর আতাউর
স্টাফ রিপোর্টার,
লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে প্রধান সড়ক এখনও কাঁচা অবস্থায় রয়েছে। জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটির পাশেই রয়েছে মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থানসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপন এবং এই মাদ্রাসাটিতে প্রতিদিন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী যাতায়াত করে। বছরের পর বছর ধরে এলাকাবাসী পাকা রাস্তার স্বপ্ন দেখলেও বাস্তবে তা থেকে যাচ্ছে শুধুই প্রতিশ্রুতির ফাঁদে বন্দি।
বর্ষা এলেই কাঁচা রাস্তাটি রূপ নেয় কাদার দুঃস্বপ্নে। কোমলমতি শিশুরা স্কুলব্যাগ কাঁধে নিয়ে প্রতিদিন নোংরা পানির ভেতর দিয়ে পা ডুবিয়ে হেঁটে যায় মাদ্রাসায়। কেউ পড়ে যায়, কারো বই ভিজে যায়। কাদায় পিছলে পড়া বাচ্চার কান্না যেন মাটি ছুঁয়ে আকাশে ওঠে, কিন্তু পৌঁছায় না কর্তৃপক্ষের কানে।
এই বিষয়ে স্থানীয় এক ব্যক্তির সাথে কথা বললে।
তিনি বলেন ,
এই রাস্তার পাশে আল্লাহর ঘর আছে, আছে আমাদের পূর্বপুরুষদের ঘুমের জায়গা—কবরস্থান। আছে আমাদের ছেলেমেয়েদের আলোর দিশারী প্রতিষ্ঠান—মাদ্রাসা। তবু কেউ দেখে না এই রাস্তার অবস্থা।”
তিনি চোখ মুছে বলেন,
মরদেহ কাধে নিয়ে কবরস্থানে যেতে কাদা মাড়িয়ে যেতে হয়। এটা আমাদের জন্য কষ্ট নয়, অপমান।”
স্থানীয় মাদ্রাসার একজন শিক্ষক বলেন,
ছাত্রদের প্রতিদিন ভিজে ভিজে আসতে দেখে খুব কষ্ট লাগে। তারা কীভাবে লেখাপড়া করবে বলুন, যদি তারা শরীর ভিজে কাঁপতে কাঁপতে ক্লাসে ঢোকে?
এলাকাবাসী বহুবার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের দ্বারে গেছেন। আবেদন করেছেন, অনুরোধ করেছেন। কিন্তু প্রতিবারই “তারা ফিরে এসেছে শুধু আশাভঙ্গ আর শূন্যতা নিয়ে।”
এলাকাবাসীর দাবিগুলো খুবই পরিষ্কার:
১.এই রাস্তা অবিলম্বে পাকাকরণ করতে হবে।
২.শিক্ষা, ধর্ম ও সামাজিক প্রয়োজন বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প হাতে নিতে হবে।
সাপ্টিবাড়ির এই রাস্তা শুধু একটি চলাচলের পথ নয়—এটি এই এলাকার স্বপ্ন, বিশ্বাস, বেঁচে থাকা, শেখা এবং প্রার্থনার পথ। এই রাস্তায় প্রতিদিন কাদা মাড়িয়ে হাঁটে ভবিষ্যতের শিক্ষক, আলেম, ডাক্তার, কৃষক, নেতা—কিন্তু প্রশাসনের চোখে তারা কেবল সংখ্যা।
এবার কি শোনা যাবে তাদের কণ্ঠ? পাকা হবে এই দীর্ঘ কষ্টের পথ?