

“চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদ হোসেন গ্রেফতার”
নিজস্ব প্রতিনিধি
চট্টগ্রামের কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও পেশাদার কিলার সাজ্জাদ হোসেনকে অবশেষে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। শনিবার, ১৫ মার্চ রাতে রাজধানীর কারওয়ান বাজারের বসুন্ধরা সিটি বিপণিবিতান থেকে তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সাজ্জাদ হোসেন দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। তার বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র ও চাঁদাবাজিসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। বিশেষ করে, গত বছরের আগস্ট থেকে অক্টোবরে চট্টগ্রামের তিন বালু ব্যবসায়ী—আনিস, কায়সার ও আফতাব উদ্দিনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় তার সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। গ্রেফতারের সময় সাজ্জাদ ঢাকার একটি শপিং মলে তার এক সহযোগীসহ ঘোরাফেরা করছিলেন। এ সময় চট্টগ্রামের এক ব্যক্তি তাকে শনাক্ত করেন এবং স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় আটক করে পুলিশে খবর দেন। পরে তেজগাঁও থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাজ্জাদকে থানায় নিয়ে যায়।
তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোবারক হোসেন ভোরের আওয়াজকে জানান, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সাজ্জাদকে দ্রুত চট্টগ্রামে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, সাজ্জাদ হোসেন চট্টগ্রামের অপরাধ জগতের অন্যতম শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তিনি বিদেশে পলাতক শিবির ক্যাডার সাজ্জাদ আলীর অনুসারী। ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই চান্দগাঁও থানা-পুলিশ অস্ত্রসহ তাকে গ্রেফতার করলেও মাসখানেকের মধ্যে জামিনে মুক্তি পান। এরপর ৪ ডিসেম্বর অক্সিজেন এলাকায় পুলিশ তাকে ধরতে গেলে সাজ্জাদ গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান, এতে পাঁচজন আহত হন।
এরপর, চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি ফেসবুক লাইভে এসে তিনি বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকে প্রকাশ্যে পেটানোর হুমকি দেন। এ ঘটনার পরদিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার হাসিব আজিজ তার গ্রেফতারে পুরস্কার ঘোষণা করেন। দীর্ঘ নজরদারির পর অবশেষে তাকে আটক করা সম্ভব হয়েছে
গডফাদারদেরও আইনের আওতায় আনা জরুরি- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সাজ্জাদ হোসেন শুধু নিজেই অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালাতেন না, বরং দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় চট্টগ্রামে তার সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক বিস্তৃত হয়েছে। তার পৃষ্ঠপোষকদের এবং যারা তাকে হত্যা ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে উত্সাহিত করেছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা জরুরি। সন্ত্রাস দমনে শুধু অপরাধীদের গ্রেফতার করাই যথেষ্ট নয়, বরং তাদের গডফাদারদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালানোর সাহস না পায়।
চট্টগ্রামে ফিরিয়ে এনে তদন্ত জোরদারের পরিকল্পনা-
গ্রেফতারের পর সাজ্জাদকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে। তার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাগুলোর তদন্ত কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।