নরসিংদীতে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে একজনকে গুলি করে হত্যা
আবুনাঈম রিপন :
রাজনৈতিক প্রতিহিংসা,এলাকার আধিপত্য ও জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নরসিংদীর মেহেরপাড়ায় এক ছাত্রদল কর্মীকে গুলি করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে নরসিংদীর পাঁচদোনা মেহেরপাড়া বাড়ির কাছে খেলার মাঠ থেকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। নিহত হুমায়ুন কবির (২৬) মেহেরপাড়া ইউনিয়নের নাগরারহাট এলাকার একরামুল হকের ছেলে। সে মেহেরপাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য।অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এদিকে হুমায়ন কবির হত্যাকান্ডের বিচার দাবী করেছেন নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসী।
নিহতের স্বজনরা জানিয়েছেন,এলাকার আধিপত্য ও জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একই এলাকার বাদল মিয়া, শাহআলম ও আতাউর মেম্বারের সাথে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। দ্বন্দ্বের জের ধরে তাদের মধ্যে একাধিক মামলার ঘটনার ঘটে। গতকাল রোববার রাতে নিহত হুমায়ন বাড়ির পাশের আঙ্গিনায় ব্যাটবিন্টন খেলছিল। রাত ১২টার দিকে দুই টি মটর সাইকেল যোগে শাহ আলম ও টিপু সহ ৪জন নিহত হুমায়নের বাড়ির সামনে আসে। ওই সময় তারা হুমায়নকে ব্যাটবিন্টন খেলা থেকে ডেকে পাঁচদোনা বাজার মাছের আড়ৎ সংলগ্ন মসজিদের দিকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে সন্ত্রাসীরা তার বুকে পিটে ও ঘারে পরপর ৩টি গুলি করে। এসময় সে মাটিতে লুটিয়ে পরে। গুলির শব্দ শুনে খেলার মাঠ থেকে লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি বর্ষন করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। পরে তারা মটোরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। মুমুর্ষ অবস্থায় হুায়নকে হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এদিকে হুমায়ন কবির হত্যাকান্ডের বিচার দাবীতে হাসপাতাল চত্ত্বরে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে এলাকাবাসী।
এর আগে শনিবার নরসিংদীর কাঠালিয়ায় ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় নুর মোহাম্মদ (৪৮) নামে এক পাওয়ারলুম কারখানা মালিককে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা । এছাড়া জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নরসিংদীর বেলাবতে ছেলের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সাফিয়া বেগম (৭০) নামে বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে।
নিহত হুমায়নের বন্ধু ও মেহের পাড়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম-সম্পাদক সুজন ভূইয়া বলেন স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল নিহত হুমায়নের। তার নেতৃত্বেই পাচঁদোনা মেহেরপাড়া ও মাধবদী আন্দোলন হয়েছিল। এসব ঘটনা নিয়ে সে এলাকার অনেকের রোষানলে পড়ে। এসবের জের ধরে তার বাড়ি ঘরে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। প্রান বাঁচাতে সে পালিয়ে থাকে। ৫ তারিখের পর এলাকায় আসে। এরই মধ্যে গতকাল তাকে বাড়ির আঙ্গিনা থেকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করে। তিনি আরো বলেন,দুইটি মটর সাইকেলে ৪ জন আসে। এর মধ্যে দুইজনকে চেনা গেছে।
একটি জমি দখল করে নেয় বাদল মিয়ারা। পরে মামলার রায় পাওয়ার পর আমার জামিটি দখলে নেই। এ নিয়ে তাদের সাথে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়। এরই জের ধরে তারা আমার ভাইকে গুলি করে হত্যা করেছে। এছাড়া স্বৈারাচার পতন আন্দোলনে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। এসব নিয়ে অনেকেই তাকে দমানোর চেষ্টা করছিল।
মাধবদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম বলেন, ব্যডমিন্টন খেলা শেষে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে পালিয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে কোন পূর্বশত্রুতার জেরেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদঘাটনসহ হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে কাজ করছে পুলিশ।