শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৫৮ অপরাহ্ন
Headline
Wellcome to our website...
নেত্রকোনায় জঙ্গি আস্তানায় ২৯ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের সমাপ্তি
/ ২০৮ Time View
Update : সোমবার, ১০ জুন, ২০২৪, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন

নেত্রকোনায় জঙ্গি আস্তানায় ২৯ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানের সমাপ্তি

ডাঃএ,কে, আজাদ খান (নেত্রকোনা বাংলাদেশ প্রতিনিধি):

দুটি আইইডি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয়
বিদেশি পিস্তল, গুলি, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ ও খেলনা একে-৪৭ সহ বিভিন্ন ধরনের ৮০টি মালামাল জব্দ
নেত্রকোনার সদর উপজেলার কাইলাটি ইউনিয়নের ভাসাপাড়া এলাকায় জঙ্গি আস্তানা সন্দেহে ঘিরে রাখা বাড়িটিতে ২৯ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান শেষ হয়েছে।

নেত্রকোনা জেলা পুলিশ, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট, বিশেষ অস্ত্র ও কৌশল (সোয়াট), সাইবার টিমসহ বেশ কয়েকটি বিশেষ টিমের দেড় শতাধিক পুলিশের সমন্বয়ে পরিচালিত এই অভিযান রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শেষ হয়। এরআগে শনিবার দুপুর ১টা থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ।

বাড়িটি থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, ১৭ রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিন, দেশি রামদা, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ, খেলনা একে-৪৭, ইলেকট্রিক করাত, মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম, ছয়টি সিসিটিভি, দুটি ফ্লাশ লাইট, একটি মার্শাল আর্ট ড্রেস, পাঁচটি এন্ড্রয়েড ফোন, সাতটি বাটন ফোন, একটি ল্যাপটপ, দুটি দূরবীন, অত্যাধুনিক কম্পাস, সিলিকনের তৈরি মানবাকৃতির পাঞ্চিং বক্সসহ ৮০টি আলামত জব্দ করা হয়েছে।

এছাড়া বাড়ি থেকে উদ্ধার করা দুটি আইইডি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে নিষ্ক্রিয় করা হয়।

অভিযান শেষে ময়মনসিংহ রেঞ্জের উপ-মহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শাহ আবিদ হোসেন সংবাদ সম্মেলনে জানান, শনিবার দুপুরে সুনির্দিষ্ট একটি তথ্যের ভিত্তিতে আমাদের নেত্রকোনা জেলা পুলিশের একটি টিম, সদর থানা পুলিশের ওসি, সার্কেল এসপিসহ এখানে আসেন। আমাদের কাছে একটি সংবাদ ছিল যে এখানে যারা বসবাস করতেন তাদের একজন নরসিংদীতে অস্ত্রসহ গ্রেফতার হয়েছে।

বাড়িটির মালিক ডুয়েট প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান। এটা উনার একটা ফিশারি প্রজেক্ট ছিল। নরসিংদীতে গ্রেফতার হওয়া হামিম হোসেন ফাহিম ওরফে আরিফ যে অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার হয়েছে তিনি এই বাড়িতে বসবাস করতেন তার পরিবার নিয়ে। আমরা অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছি তারা ২-৩ বছর ধরে এখানে বসবাস করছেন। নরসিংদীর পুলিশ আমাদের জানায়— এখানে এ রকম একটা ফিশারি প্রজেক্ট আছে কি না? আমরা খোঁজ নিয়ে তাদের নিশ্চিত করি যে নেত্রকোনাতে এ রকম একটি প্রজেক্ট আছে।

ডিআইজি আরও বলেন, এ বাড়ির মালিক আব্দুল মান্নান পুলিশকে জানিয়েছেন এই বাড়িতে যারা ভাড়া থাকতো তাদের একজন অস্ত্র মামলায় আটক হয়েছে। তিনি ধারণা করছিলেন— এখানে হয়তো আরও কিছু থাকতে পারে এবং বাড়ি তালাবদ্ধ অবস্থায় আছে। এরই প্রেক্ষিতে পুলিশ এখানে শনিবার এসে এলাকার লোকদের নিয়ে তালা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে এবং প্রাথমিক তল্লাশিতে একটি অস্ত্র ও গুলি পায়। পুলিশ আরও তদন্ত করার পর বুঝতে পারে ভেতরে বিস্ফোরক দ্রব্য আছে, এখান থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণ হতে পারে। তারপর এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা প্রতিনিধি পাঠায়।

তিনি বলেন, সকালে ময়মনসিংহ এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান আব্দুল্লাহ চৌধুরী সকালে তার টিম নিয়ে আসেন। এরপরই এন্টি টেরোরিজম ইউনিটের বোম ডিসপোজাল ইউনিটের প্রতিনিধি হিসেবে পুলিশ সুপার সানোয়ার হোসেন তার টিম নিয়ে আসেন। তিনি এসে বিস্তারিত দেখে সিদ্ধান্ত নেন এক্সপার্ট টিম এনে এটাকে নিষ্ক্রিয় করতে হবে। সকাল থেকে অভিযানের পর দুটি শক্তিশালী আইইডি বোমা নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে। আমরা ভেতরে ঢুকে দেখতে পেলাম সাধারণত বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে যারা কাজ করে তাদের ওখানে যে ধরনের জিনিসপত্র পাওয়া যায়। ওই ধরনের আলামত আমরা এখানে পেয়েছি এবং সেগুলো জব্দ করা হয়েছে।

ডিআইজি আরও বলেন, এখানে অভিযান চালিয়ে একটি বিদেশি পিস্তল, ১৭ রাউন্ড গুলি, দুটি ম্যাগাজিন, দেশি রামদা, ওয়াকিটকি, হ্যান্ডকাফ, খেলনা একে-৪৭, ইলেকট্রিক করাত, মার্শাল আর্ট প্রশিক্ষণের সরঞ্জাম, ছয়টি সিসিটিভি ক্যামেরা, দুটি ফ্লাশ লাইট, একটি মার্শাল আর্ট ড্রেস, পাঁচটি এন্ড্রয়েড ফোন, সাতটি বাটন ফোন, একটি ল্যাপটপ, দুটি দূরবীন, অত্যাধুনিক কম্পাস, সিলিকনের তৈরি মানবাকৃতির পাঞ্চিং বক্সসহ ৮০টি আলামত জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি এখানে যে দুটি আইইডি (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে সেগুলো যথেষ্ট শক্তিশালী ছিল। একটি বোমা অবস্থানগত কারণে বাসার ভেতরেই নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ করতে আমরা বাধ্য হয়েছি। আরেকটি বাইরে নিয়ে এসে নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণ করা হয়েছে।

ভেতরে যে দুটি বোমা পাওয়া গেছে, সেই দুটি বোমা যথেষ্ট শক্তিশালী। বোমা দুটি নিয়ন্ত্রিত বিস্ফোরণের কারণে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। কিন্তু অসাবধানতা বসত যদি এগুলো বিস্ফোরিত হতো তাহলে মারাত্মক ক্ষয়ক্ষতি হতো। আমরা যেসব জিনিসপত্র এখান থেকে উদ্ধার করেছি তা দেখে আমাদের মনে হয়েছে এটা একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র।

শনিবার রাত থেকে নেত্রকোনা শহরের বনুয়াপাড়া এলাকায় আরেকটি বাড়ি পুলিশ ঘিরে রাখে। সেখানে অভিযান চালানো হবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এই বাড়ির ঘটনার সঙ্গে ওই বাড়ির কিছু লিংক আছে। কিন্তু তদন্তের গোপনীয়তার কারণে আমরা এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু বলছি না। সময় হলে আপনাদের এ বিষয়ে তথ্য জানানো হবে।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page