বিশ্বাসকে সঙ্গী করে অধরা শিরোপার স্বপ্ন আঁকছেন মার্করাম
বিপ্লব কুমার দাস। প্রধান উপদেষ্টা এবং সম্পাদক ও নিজস্ব প্রতিবেদক 24Hrstvbd.com
বাংলাদেশ।
আফগানিস্তান এই বিশ্বকাপে যত ভালোই খেলুক না কেন, সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা নেমেছিল ফেভারিট হিসেবেই। তবে বারবার শেষ চার থেকে হৃদয়ভঙ্গের ইতিহাসের কারণে সংশয়ের মেঘও জমেছিল বেশ। তবে সেসব তুড়ি মেরে উড়িয়ে ফাইনালে পা রেখেছে আফ্রিকার দেশটি, যা তাদের ইতিহাসেরই প্রথম। আসর জুড়ে অপরাজিত দক্ষিণ আফ্রিকা যেভাবে ছুটে চলেছে, তাতে স্বপ্নের পারদ আরও চওড়া হয়েছে গর্বিত অধিনায়ক এইডেন মার্করামের। তার দৃঢ় বিশ্বাস, এটাই সময় দক্ষিণ আফ্রিকার কাপ জেতার।
এর থেকেও অনেক শক্তিশালী দল নিয়ে আগে বিশ্বকাপ খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই তুলনায় এবারের দলটা ততোটা তারকাসমৃদ্ধ নয়। তবে দলীয় চেতনা ও বিশ্বাসের পাশাপাশি কঠিন পরিস্থিতিতে চাপকে জয় করার যে দক্ষতা, সেটা দিয়ে পূর্বসূরিরা যা পারেননি, সেটাই করে দেখিয়েছে এই দলটি। একে একে টানা আট ম্যাচ জিতে চলে গেছে শিরোপা থেকে মাত্র এক ধাপ দূরে। ফেভারিট হিসেবে আসর শুরু না করলেও দক্ষিণ আফ্রিকার ফাইনালে যাওয়ার পথচলাটা দুর্দান্ত এক গল্পই।
আফগানিস্তানকে সেমিফাইনালে ৯ উইকেটে হারানোর পর মার্করাম বলেছেন, এমন কিছু যে তারা করতে পারেন, সেই বিশ্বাস সঙ্গী করেই বিশ্বকাপে এসেছিলেন তারা। “(প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলা) এটা আসলেই দারুণ একটা অনুভূতি। দুই ফরম্যাটেই সাদা বলের ক্রিকেটে এই গ্রুপটা অনেকদিন ধরেই একসাথে খেলছে। আমাদের জন্য তাই ফাইনালে যাওয়াটা খুব ভালো ব্যাপার। আমাদের বিশ্বাসটা ছিল যে, আমরা বিশ্বের সেরা দলগুলর সাথে লড়তে পারি এবং আমরা শিরোপা জিততে পারি। তাই আমাদের জন্য সেটা করে দেখানো এবং শিরোপা জেতার সুযোগ তৈরি করাটা দুর্দান্ত কিছু।”
এর আগে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে মোট সাতবার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতিবারই অবতারণা হয়েছিল একই চিত্রের। আসল সময়ে কাজের কাজটা আর করতে পারেনি খেলোয়াড়রা। গত বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও শেষ চার থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল প্রোটিয়াদের। সেই দলের অধিকাংশ সদস্যই আছেন এই বিশ্বকাপের দলেও।
এবার তাই ফাইনালে পা রাখতে পেরে ভীষণ খুশি মার্করাম। “প্রথমবার ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা নিয়ে আমরা সেভাবে কিছু বলিনি। আমার কাছে মনে হয় এটা একটা ব্যক্তিগত অনুপ্রেরণার ব্যাপার যে আপনি ফাইনাল খেলা এবং (দেশের হয়ে) শিরোপা জেতার একটা সুযোগ তৈরি করবেন। তবে আমরা জানি, খেলাটা কেমন। এখানে কিছু জিনিস আপনার পক্ষে যেতে পারে, আবার বিপক্ষেও। পাঁচ মাসে আগে আমরা যেমন এমন মঞ্চেই সুযোগটা কাজে লাগাতে পারিনি সেমিফাইনালে। তবে আজকে পেরেছি কারণ কিছু জিনিস আমাদের পক্ষে গেছে। এই দলের খেলোয়াড়দের জন্য আমি ভীষণ খুশি।”
কোনো ম্যাচ না হেরে ফাইনালে গেলেও দক্ষিণ আফ্রিকা কয়েকটি ম্যাচে জয় পেয়েছে খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে। গ্রুপ পর্বে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে মামুলি রান তাড়ায় ১২ রানে চলে গিয়েছিল ৪ উইকেট। এরপর বাংলাদেশ ও নেপালের বিপক্ষে জয় ধরা দেয় মাত্র ৪ ও ১ রানে। সুপার এইটে ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেও জিততে বেশ সংগ্রাম করতে হয় মার্করামের দলকে। কিছুটা কী ভাগ্যের ছোঁয়া ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার?
অধিনায়ক মার্করাম অবশ্য নিজেদের চাপ সামলে নেওয়ার দক্ষতাকেই এখানে এগিয়ে রাখতে চাইলেন। “সত্যি বলতে আমি এই ধরণের (ভাগ্য) কোনো কিছুটা বিশ্বাস করি না। খেলাটাই এমন, কেউ জিতবে, কেউ হারবে। এটাই নিয়ম। আপনাকে বিশ্বাসটা ধরে রাখতে হবে। আর এই ধরণের ম্যাচ জিতলে সেটা দলের ভেতর বিশ্বাসটা বাড়িয়ে দেয় এবং আবহটাও বদলে দেয়। আমরা সেখান থেকে আত্মবিশ্বাস পেয়েছি এবং দেখা যাক সেটা সামনে কাজে দেয় কিনা।”
শিরোপার লড়াইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা খেলবে ভারত বা ইংল্যান্ডের মধ্যে একটি দলের বিপক্ষে।
সম্পাদক: বিপ্লব কুমার দাস,প্রকাশক:আবছার উদ্দিন