মানিকগঞ্জে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ, চরম ভোগান্তিতে কার্ডধারী আসহায় ব্যক্তিরা
শাহাদুর রহমান সুজন, স্টাফ রিপোর্টারঃ মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার তিল্লি ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অসহায় দুঃস্থদের ৫০৪টি ভিজিএফ কার্ডের চাল বিতরণ করা হলেও বিকেল ৫টা পর্যন্ত ৩৩ জন কার্ডধারী চাল পাননি। বিতরণ সম্পন্ন শেষ হবার আগেই ঘটনাস্থল ছেড়ে গেছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুজয় চন্দ্র সরকার।
বুধবার সকাল ৯টায় ১নং ওয়ার্ডের তিল্লি বাজার মাঠ সংলগ্ন ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনে ১, ২, ৩ ও ৪নং ওয়ার্ডে চাল বিতরণ শুরু হয়।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চাল বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন না ট্যাগ অফিসার ও উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুজয় চন্দ্র সরকার। তিনি সাড়ে ১২টায় এসে কিছুক্ষণ পরেই চলে যান। ইউপি সদস্য মনির হোসেন জানান, বস্তা হিসেবে (প্রতি বস্তা ৫০ কেজি) ১০১টি বস্তা থাকার কথা থাকলেও গোডাউনে মাত্র ৯৩ বস্তা চাল ছিল। স্থানীয়দের চাপের মুখে আরও ৭ বস্তা চাল আনা হলেও ৩৩ জন কার্ডধারী চাল পাননি। তারা ইউনিয়ন পরিষদের পুরাতন ভবনে অবস্থান নিয়েছেন।
ভুক্তভোগী জোসনা বেগম (৬১) জানান, তিনি ভোর সকালে চাল নিতে এলেও বিকেল ৫টা পর্যন্ত চাল পাননি।
পুতুল (৬৫) ও রশিদ (৫০) একই অভিযোগ করে বলেন, সকাল ৭টায় এসে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও চাল পাইনি। না খেয়ে বসে আছি। চাল পাব কিনা সেটাও জানি না।
তিল্লি ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আনন্দ দাস অভিযোগ করে বলেন, এই চেয়ারম্যান একজন আওয়ামী দোসর ও দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তি। সে চাল কম দিয়ে বাকি চাল বিক্রি করার ধান্ধা করছে। আমরা এর বিচার চাই।
সাটুরিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তিল্লি ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব হোসেন বলেন, অসহায় দুস্থ গরিবদেরকে নিয়ে বাণিজ্য করছে এই চেয়ারম্যান। সে সাটুরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েও এখনও বহাল তবিয়তে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছে। আজকে কার্ডধারী ৩৩ জন লোক চাল পায়নি। তাদেরকে অবশ্যই চাল বুঝিয়ে দিতে হবে। প্রশাসনের কাছে এই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি করছি।
চাল বিতরণের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুজয় চন্দ্র সরকার বলেন, আমি দুপুর ১২টার সময় চাল বিতরণে যাই। চাল কম দেখতে পেয়ে দ্রুত চাল আনতে বলি। এরপরও ২৭ জন লোকের চাল কম হয়েছে। পরে চেয়ারম্যান আমাকে চলে আসতে বললে আমি সেখান থেকে চাল বিতরণ শেষ না করে চলে আসি।
তিল্লি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম ধলা বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে চালের বস্তা পৌঁছাতে দেরি হচ্ছে। চাল বিতরণের সময় ট্যাগ অফিসার উপস্থিত ছিলেন বলে দাবি করেন তিনি।
এ বিষয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, এ বিষয়ে ট্যাগ অফিসার ও চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেন। আমি মিটিংয়ে আছি।
সম্পাদক ও প্রকাশক:আবছার উদ্দিন