

রাজনৈতিক দলের সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শুদ্ধাচার খুবই জরুরী
আবুল হারিছ রিকাবদার
কালা মিয়া স্যার
আবুনাঈম রিপন: স্টাফ রিপোর্টার:
নরসিংদী জেলার শিবপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি,আবুল হারিছ রিকাবদার কালা মিয়া স্যার,রাজনৈতিক পেক্ষাপটে,
আলাপচারিতায় বলেন,বর্তমান সরকার বিভিন্ন ধরনের সংস্কার প্রস্তাবের কথা বলছে।কিন্তু একটি দেশের টেকসই রাজনৈতিক কাঠামো শুদ্ধ গণতন্ত্র বিকাশে ভূমিকা রাখে।এ রাজনৈতিক কাঠামো তৈরির ক্ষেত্রে শুদ্ধ রাজনীতির চর্চা বেশি জরুরী। শুদ্ধ রাজনৈতিক চর্চার বিকাশে রাজনৈতিক সংস্কৃতির উন্নয়ন
ও রাজনৈতিক শুদ্ধাচার (Political Integrity) বেশি জরুরি। প্রকৃতপক্ষে গণতন্ত্রের বিকাশ ও জনগণের ক্ষমতায়নের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোতে এ সংস্কার বেশি জরুরী। রাজনৈতিক দলে সংস্কার হলে গণতন্ত্র মজবুত ভিত্তি পায়।
বাংলাদেশ সৃষ্টির আগে থেকে পরে পর্যন্ত ভোটের অধিকার নিশ্চিত করা নিয়েই রাজনৈতিক দলগুলো লড়াই করেছে। এজন্যই ৬৯ এর গণ-অভ্যুত্থান, ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ, ৯০ এর গণ-অভ্যুত্থান এবং ২৪ এর ফ্যাসিবাদ বিরোধী গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। বর্তমান সরকার গণ-অভ্যুত্থানেরই ফসল। এ সরকার সংস্কার নিয়ে খুবই আগ্রহী। কিন্তু সকল সংস্কারের মূল হচ্ছে রাজনৈতিক সংস্কার।
রাজনৈতিক সংস্কারের প্রথম ধাপ হচ্ছে রাজনৈতিক দলে সংস্কার। রাজনৈতিক দলে উচ্চশিক্ষিত, অর্ধশিক্ষিত, অশিক্ষিত মানুষ যেমন থাকে তেমনি নানা ধর্ম ও বর্ণের লোকজন থাকে। এরকম বিভিন্ন ধরনের মানুষের মধ্যে উচ্চ রাজনৈতিক সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো সত্যিই কঠিন। কেননা মানুষ স্বাভাবিকভাবেই পরিবর্তনকে মেনে নিতে চায় না। তাই যেকোন সংস্কার করার পূর্বে সংস্কারের বিষয়গুলো জনগণকে ভালো করে বুঝানো জরুরী। এতে কি পজিটিভ পরিবর্তন আসবে এবং মানুষ কি কি উপকার পাবে সেটা জানানোও জরুরী। তারপর সংস্কারের বিষয়গুলো চর্চা করাও প্রয়োজন। কেবলমাত্র তাতেই সংস্কার টেকসই হয়।
কিছু সংস্কার আছে যা আইন ও বিধিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে করা সম্ভব। সেগুলো পরিপালন না করলে দন্ড আরোপ করা হয়। তাই জনগণ তা পরিপালন করতে বাধ্য হয়। এজাতীয় সংস্কার বাস্তবায়ন খুবই সহজ।
বর্তমান সরকারের উচিত সর্বপ্রথমে রাজনৈতিক দলগুলোতে সংস্কার আনা। যদিও এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া। তাই অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য এটি বাস্তবায়ন করা কঠিন।
রাজনৈতিক দলে সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক শুদ্ধাচার খুবই জরুরী। এ শুদ্ধাচার top down approach হতে পারে। এতে এটি সাধারনের কাছে অধিকতর গ্রহণীয় হবে। এক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতৃত্ব নির্বাচন, নেতা নির্বাচনে অতীত কার্যক্রম পর্যালোচনা, পদপ্রার্থী ব্যক্তির সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা, সমাজ পরিবর্তনে বা সামাজিক উন্নয়নে তার ভূমিকা ইত্যাদি বিবেচনায় নিতে হবে।
বাংলাদেশের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপি ইতোমধ্যেই দলে বেশকিছু সংস্কারের অঙ্গীকার করেছে। এ অঙ্গীকারগুলো রাজনৈতিক শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে।যেমনঃ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নেতা নির্বাচন, প্রার্থী মনোনয়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ, ব্যবসায়ী নয়, রাজনৈতিক নেতাদের হাতে রাজনীতি ফিরিয়ে দেয়া, কোন চাঁদাবাজ, মামলা ব্যবসায়ীকে নির্বাচনে মনোনয়ন না দেয়া, নারীদের ক্ষমতায়ন, দলে চেইন অফ কমান্ড প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি।
কার্যকরভাবে এসকল বিষয় নিশ্চিত করতে পারলে বিএনপিতে রাজনৈতিক শুদ্ধাচার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।