রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৩:৪০ পূর্বাহ্ন
Headline
কুমিল্লায় ৪ জনের নতুন ভ্যারিয়েন্টে করোনা শনাক্ত গুজ”ব ছড়ানো হয়েছিল শিক্ষক ইলিয়াস কে নিয়ে সরাইল গ্রামবাসীর উদ্যোগে মাদক ও চুরি- ডাকাতির বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ সভা কালিয়াকৈরে উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর গুড়িয়ে দিলো ইরান! কালীগঞ্জে সাপের কামড়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীর মৃত্যু। কুমিল্লা থেকে মানুষ ছুটছেন ঢাকায়, বাসের তীব্র সংকটে ভোগান্তি চরমে কুমিল্লা সীমান্ত দিয়ে ভারতে ২৮ লক্ষ টাকা পাচারকালে হুন্ডি ব্যবসায়ী আটক ব্রাহ্মণবাড়িয়া নাসিরনগরে প্রিয় নবীকে নিয়ে কটূক্তি করায় নাস্তিক এমাদুদ্দিন শুভকে গ্রেফতারের দাবীতে মানববন্ধন করেছে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত গোকর্ণ ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান। সেনা ব্যারাক থেকে জনতার হৃদয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান— গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য একজন মহানায়কের সংগ্রাম
Headline
Wellcome to our website...
সেনা ব্যারাক থেকে জনতার হৃদয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান— গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য একজন মহানায়কের সংগ্রাম
/ ১১ Time View
Update : শনিবার, ১৪ জুন, ২০২৫, ৬:৪১ পূর্বাহ্ন

সেনা ব্যারাক থেকে জনতার হৃদয়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান—
গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য একজন মহানায়কের সংগ্রাম

মণিরামপুর(যশোর)প্রতিনিধি:-যশোরের মণিরামপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডঃ শহিদ মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপিকে ভালোবাসি আমি শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে ভালোবাসি কারণ
বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন কিছু মহাপুরুষ রয়েছেন, যাঁদের জীবন দর্শন ও অবদান জাতির জন্য সদা প্রায়োগিক ও পথপ্রদর্শক হয়ে থাকে। তাঁদের মাঝে এক অনন্য নাম শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, যিনি সেনা ব্যারাক থেকে উঠে এসে জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। রাষ্ট্রের জন্য আত্মত্যাগ করেছেন এবং গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার মশাল জ্বালিয়েছেন।
তাঁর জীবনের বিভিন্ন অধ্যায়— যুদ্ধক্ষেত্রে বীরত্ব, রাজনীতিতে সাহসিকতা এবং রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে দূরদর্শিতা এই জাতির ইতিহাসে স্থায়ীভাবে আলপনা এঁকে ফেলেছে। ১৯৬৫ সালের পাকিস্থান-ভারত যুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অসীম সাহসিকতাঃ একজন তরুণ সৈনিক হিসেবে ১৯৬৫ সালের পাকিস্থান-ভারতের যুদ্ধে অংশগ্রহণের ভেতর দিয়ে জিয়াউর রহমান অসাধারণ সাহসিকতার স্বাক্ষর রাখেন। এই যুদ্ধে তিনি যুদ্ধক্ষেত্রে যে দৃঢ়তা, দায়িত্ববোধ এবং ত্যাগ তিতিক্ষা প্রদর্শন করেন—সেটি শুধু সেনাবাহিনীর গৌরবই বৃদ্ধি করেননি বরং পরবর্তী সময়ে তাঁর নেতৃত্ব ও নিষ্ঠার ভিত্তিও গড়ে দেয়। এই যুদ্ধ ছিল তাঁর নেতৃত্ব জীবনের প্রথম পাঠ যেখানে সাহসিকতা ও কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা তাঁকে করে তোলে অনন্য এক দুঃসাহসিক পুরোধা। একই সাথে সহযোদ্ধাদের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক, দুরূহ পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা এবং কঠিন বাস্তবতাকে মোকাবিলার মানসিক প্রস্তুতি তাঁকে পরিণত করে ভবিষ্যতের এক অবিসংবাদিত নেতায়। এই সময়ে সেনাবাহিনীর কাঠামো ও শৃঙ্খলার মধ্যেও জিয়াউর রহমান মানবিকতা ও বীরত্বের এমন এক নিদর্শন রেখেছেন যা কেবল একজন সেনানায়ক হিসেবে নয় বরং একজন জাতীয় বীর হিসেবেও তাঁকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাঁর এই সাহসিকতার স্বীকৃতি শুধু সামরিক নয় বরং জাতীয় ইতিহাসে তাঁর ভূমিকা এক অনন্য মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার ঘোষণাঃ বাঙালি জাতির ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবময় অধ্যায় হলো—১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ। সেই সময়ে মেজর জিয়াউর রহমান দেশের ভয়াবহ সংকটে মহান স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁর ঘোষণা, তাঁর কণ্ঠস্বর বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে। তিনি বুঝতে পেরেছিলেন, একটি নিপীড়িত জাতিকে মুক্ত করতে হলে কেবল স্বপ্ন নয় বরং অসমসাহসিকতা ও যথাযথ দিক-নির্দেশনা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর সেই ঘোষণাই ভবিষ্যৎ স্বাধীন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করে। পরবর্তী নয় মাস রক্তক্ষয়ী সম্মুখ সমরে নেতৃত্ব দিয়ে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে কঠিন সমরে অবতীর্ণ হন।
তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলি কেবল যুদ্ধক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ ছিল না বরং আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তিনি বাংলাদেশের ন্যায্যতা ও মুক্তিযুদ্ধের নৈতিক ভিত্তিকে উপস্থাপন করেন। তাঁর চেতনা ও আদর্শ লক্ষ লক্ষ মানুষকে উজ্জীবিত করে। ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতা বিপ্লব— সামরিক শাসন থেকে জনগণের হাতে ক্ষমতাঃ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশে বিদ্যমান নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি আরো ঘণীভূত হয়। সামরিক শাসন ও রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে ভেঙে দেয়। কিন্তু সেই অন্ধকারে আলোর ঝলকানি নিয়ে আসে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর ১৯৭৫। এই দিনে সিপাহী-জনতার বিপ্লব শুধু একটি সামরিক আন্দোলন ছিল না বরং এটি ছিল জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি জনসাধারণের ভালোবাসা ও সৈনিকদের আস্থা তাঁকে পরিণত করে এক জনপ্রিয় জাতীয় নেতায়। এই বিপ্লব ছিল—নতুন এক সূচনা, যা সামরিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক পরিকাঠামো গঠনের ভিত্তি স্থাপন করে। জনগণের স্বপ্ন, আশাভরসা এবং মুক্তির আকাঙ্ক্ষা তাঁর নেতৃত্বে সঙ্গতিপূর্ণ রূপ লাভ করে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের দূরদর্শী সিদ্ধান্ত— সমাজতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথে বাংলাদেশঃ বাংলাদেশের ইতিহাসে ৭ নভেম্বর ১৯৭৫ একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। এই দিনটিকে অনেকেই ‘জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করেন। এই দিনেই মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান এক যুগান্তকারী রাজনৈতিক পথচলার সূচনা করেন, যা ভবিষ্যতের বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দেয়। বিপ্লব পরবর্তী বাংলাদেশকে সমাজতান্ত্রিক আদর্শ থেকে সরিয়ে এনে গণতন্ত্রকামী একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত ছিল তাঁর সবচেয়ে বড় দূরদর্শী পদক্ষেপ। এ সিদ্ধান্তে বাংলাদেশের ইতিহাসে নতুন একটি অধ্যায়ের সূচনা হয়। ১৯৭০-এর দশকে বিশ্বজুড়ে বিপ্লব পরবর্তী সময়ে ভিয়েতনাম, কিউবা, লিবিয়া এবং বিভিন্ন আফ্রিকান রাষ্ট্র সমাজতান্ত্রিক ধারা গ্রহণ করলে বাংলাদেশেও সে সময় সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা দেখা যায়। ১৯৭২ সালের সংবিধানেও সমাজতন্ত্র ছিল অন্যতম মূলনীতি। কিন্তু এই ধারা জনগণের জীবনে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি বা স্থিতিশীলতা আনতে ব্যর্থ হয়। রাজনৈতিক অস্থিরতা, অর্থনৈতিক দুরবস্থা ও চরম দলীয়করণ পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।

এই পটভূমিতে ৭ নভেম্বরের পর শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশকে একটি নতুন দিক নির্দেশনা দেন। তিনি বুঝতে পারেন, দেশীয় বাস্তবতা ও বৈশ্বিক রাজনীতির প্রেক্ষাপটে গণতান্ত্রিক ধারা ও মুক্ত বাজারনীতি অনুসরণ করাই হবে টেকসই উন্নয়নের পথ। তিনি ধাপে ধাপে রাজনৈতিক দল গঠনের সুযোগ সৃষ্টি করেন, বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথ উন্মুক্ত করেন এবং মুক্ত অর্থনীতির দিকে অগ্রসর হন। তাঁর শাসনামলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের ধারণাটি কার্যকর প্রতিষ্ঠা লাভ করে; যার মূল ভিত্তি ছিল—স্বাধীন, সার্বভৌম ও ধর্মীয় মূল্যবোধ-সমন্বিত একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র। বহুদলীয় গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ইতিহাস ও তাৎপর্যঃ বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর রাজনৈতিকভাবে দেশকে একটি স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক পথে পরিচালিত করা ছিল সবচেয়ে বড় এবং তাৎপর্যপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলোর একটি। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি নতুন রাষ্ট্রে কেবল ভৌগোলিক স্বাধীনতা যথেষ্ট ছিল না, প্রয়োজন ছিল— নাগরিকদের রাজনৈতিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা এবং একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা। এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে তিনি স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে জাতিকে রাজনৈতিকভাবে সংগঠিত করার লক্ষ্য নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান মনে করতেন—একটি উন্নত জাতি গঠনের জন্য বহুদলীয় গণতন্ত্র অপরিহার্য। সেই চিন্তা থেকেই ১৯৭৮ সাল থেকে তিনি দেশে বহুদলীয় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। একদলীয় শাসনের পরিবর্তে তিনি রাজনৈতিক মতের বৈচিত্র্যকে স্বীকৃতি দেন এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনৈতিক পরিমণ্ডল গড়ে তোলার পথ তৈরি করেন। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সংবাদপত্র ও প্রচারমাধ্যমের ওপর দীর্ঘদিন ধরে চলমান নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা হয়। সাংবাদিকদের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়; যাতে তারা মুক্তভাবে মত প্রকাশ করতে পারে এবং জনগণ সত্য জানতে পারে।এছাড়াও দেশের বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ চালু করা হয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনকে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার পূর্ণ স্বাধীনতা প্রদান করা হয়। এই পদক্ষেপগুলো ছিল—গণতন্ত্রের শিকড় মজবুত করার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী বলে বিবেচিত। জিয়াউর রহমান দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন—একটি দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি তখনই সম্ভব, যখন সেই দেশের রাজনৈতিক পরিবেশ মুক্ত ও সহনশীল হবে। কেবল অর্থনৈতিক উন্নয়ন যথেষ্ট নয় বরং রাজনৈতিক সংহতি, মতবিনিময়ের সুযোগ এবং অংশগ্রহণমূলক শাসন ব্যবস্থাই পারে একটি জাতিকে এগিয়ে নিতে। এই বিশ্বাস থেকেই তিনি এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেন, যেখানে মত ভিন্নতা কোন বিচ্যুতি নয় বরং গণতন্ত্রের স্বাভাবিক রূপ। এই দর্শনের বাস্তবায়নে রাষ্ট্রপ্রধান জিয়াউর রহমান একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেন যা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি নামে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এই দলটি গঠিত হয়েছিল— “জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস” এই মূলনীতি ও “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” এই আদর্শকে ভিত্তি করে। দলের দর্শন ছিল— জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে জনগণের অংশগ্রহণে একটি গণমুখী এবং ভারসাম্যপূর্ণ রাষ্ট্র গঠন করা।

এভাবে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় সূচিত হয়, যা শুধু দেশের জন্য নয় বরং দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটেও একটি ব্যতিক্রমধর্মী দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে।
বাংলাদেশে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রীয় কাঠামোর ভিত্তি স্থাপন করাঃ যে কোনো নতুন রাষ্ট্রের মতো বাংলাদেশও স্বাধীনতার পরপরই নানা চ্যালেঞ্জ ও সমস্যার মুখোমুখি হয়। জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক অঙ্গনে আত্মপ্রকাশ করে। জাতিসংঘে সদস্যপদ লাভ, ওআইসিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ, পাশ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়ন, এসব তাঁর কৌশলী কূটনৈতিক নীতির ফল।
অন্যদিকে অর্থনৈতিকভাবে তিনি গ্রহণ করেন একটি বাস্তবমুখী নীতি। কৃষি, শিল্প, ও শিক্ষা খাতের উন্নয়ন, অবকাঠামো নির্মাণ, প্রবাসী আয়ের ওপর জোর দিয়ে দেশের ভিত শক্ত করেন। তাঁর সময়েই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো রপ্তানি খাতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি লাভ করে।
রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান Decentralization বা বিকেন্দ্রীকরণের ওপর জোর দেন যাতে গ্রাম পর্যায়ে মানুষ সরকারি সেবা সমূহ পেতে পারে। তিনি স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করে তোলেন। নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষার বিস্তার এবং দারিদ্র্য হ্রাসের জন্য নানা প্রকল্প নেয়া হয় তাঁর আমলে।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত ও তাঁর প্রেক্ষিতে বাংলাদেশের অপূরণীয় ক্ষতিঃ

৩০ মে ১৯৮০ সালের প্রত্যুষে চট্টগ্রামের সার্কিট হাউসে এক ভয়াবহ জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে শহীদ হন বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। এই হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গভীর দুঃখজনক ও মোড় পরিবর্তনকারী ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর শাহাদাত কেবল একজন রাষ্ট্র নেতার মৃত্যু ছিল না বরং একটি সম্ভাবনাময় জাতীয় অভিযাত্রার ব্যাঘাত ঘটায়।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদতের ফলে বাংলাদেশ যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়, তা ছিল বহুমাত্রিক। প্রথমত একটি কার্যকর ও গতিশীল নেতৃত্বের অভাবে দেশ রাজনৈতিকভাবে আবারো অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়। তাঁর দ্বারা গৃহীত প্রশাসনিক সংস্কার ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ক্রমশ স্থবির হয়ে পড়ে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের বিকাশের যে ধারা তিনি চালু করেছিলেন সেটি এক দশকের জন্য ব্যাহত হয়। দেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি হয় এবং পরবর্তীকালে সামরিক হস্তক্ষেপের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়, যা গণতন্ত্রের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে কেননা একজন রাষ্ট্রপতির হত্যাকাণ্ড সারা পৃথিবীতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়।

শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত একটি জাতির জন্য সবসময়ই শোকাবহ অধ্যায়। তিনি দেশপ্রেম, সততা ও দৃঢ় নেতৃত্বের প্রতীক ছিলেন। তাঁর অসমাপ্ত স্বপ্ন ও উন্নয়ন পরিকল্পনা জাতির ভবিষ্যৎ নির্মাণে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকলেও তাঁর অকাল শাহাদাত বরণ সেটি বাস্তবায়নের পথরুদ্ধ করে দেয়। আজও তাঁর শাহাদাত বরণে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি আলোচিত ও গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে বিবেচিত হয়। তাঁর অবদান আমাদের শেখায় নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা ও গণতন্ত্রের চর্চা রক্ষা করাই জাতির উন্নয়নের চাবিকাঠি।

জনতার হৃদয়ে স্থান পাওয়াঃ

রাষ্ট্রনায়ক জিয়াউর রহমানের জীবনের শেষ অধ্যায়েও জনগণের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল অটুট। তাঁর মৃত্যুর পর লাখো মানুষের অশ্রু বিসর্জন আর শ্রদ্ধা প্রদর্শন প্রমাণ করে যে, তিনি কেবল একজন রাজনীতিবিদ ছিলেন না বরং তিনি ছিলেন— জাতির আশা, আস্থার প্রতীক; ছিলেন এমন এক সময়ে যখন রাজনীতিতে ভণ্ডামি, আত্মস্বার্থ আর দ্বন্দ্বি ছিল ঘনীভূত।

সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, যুবকদের জন্য কর্মসংস্থান, উন্নততর শিক্ষানীতি ও স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন—সবকিছুতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জনগণকেই কেন্দ্র করে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। তাঁর প্রতিটি পদক্ষেপে প্রতিফলিত হয়েছে জনকল্যাণমুখী নেতৃত্বের চেতনা।

একজন সেনা কর্মকর্তার জীবন থেকে শুরু করে রাষ্ট্রনায়ক হওয়া এবং জাতির হৃদয়ে স্থায়ী স্থান পাওয়া একটি দুর্লভ যাত্রা। একজন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান প্রমাণ করেছেন— নেতৃত্ব কেবল পদ-পদবির বিষয় নয় বরং এটি মানুষের আস্থা, ভালোবাসা এবং সম্মান অর্জনের বিষয়। যিনি ব্যারাক থেকে জনতার হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি সবসময়ের জন্য আমাদের গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক।

আজকের প্রজন্মের জন্য তাঁর জীবন হলো— একটি জীবন্ত পাঠ, যা থেকে শেখার আছে দায়িত্ববোধ, নৈতিকতা ও দেশপ্রেম। তাঁর কৃতিত্বের স্বীকৃতি কেবল ইতিহাসের পাতায় সীমাবদ্ধ থাকেনি বরং সেটি জাতির প্রতিদিনের জীবনে অনুসরণীয় চেতনা ও আদর্শে পরিণত হয়েছে। প্রকৃত অর্থে তাঁর সমতুল্য নেতৃত্বের দৃষ্টান্ত বিশ্বে বিরল আর বাংলাদেশে অবিসংবাদিত।

লেখকঃ এ্যাডঃ শহিদ মোঃ ইকবাল হোসেন,সভাপতি মণিরামপুর উপজেলা বিএনপি

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page