১৩৬ কোটি টাকা ঋণের নামে অর্থ লোপাট – “অন লাইন গ্রুপ ও এর এম.ডি খাঁন মোঃ আক্তারুজ্জামান।
মোঃ রেজাউল করিম
স্টাফ রিপোর্টাঃ সমগ্র বাংলাদেশ।
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট ই.সি.বি চত্বরের পাশেই অন-লাইন প্রোপার্টিজের অফিস যার এম.ডি খাঁন মোহাঃ আক্তার। ২০১২ সালে এই ঋণ নেয়া যখন বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, তখন তার অনিয়ম জালিয়াতির কারণে তার নেতৃত্বে ব্যাংক থেকে বিপুল অর্থ লোপাট হয়। প্রথম ধাপে আবাসন প্রতিষ্ঠান এই অন-লাইন গ্রুপ ঋণ গ্রহণ করে ৭০ কোটি টাকা যা বেসিক ব্যাংকের প্রধান শাখা থেকে নেয়া। প্রায় ১৩ বছর পার হলেও বেসিক ব্যাংকের কোন টাকা অন- লাইন গ্রুপ ফেরত দেয়নি বলে জানিয়েছেন উক্ত বেসিক ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক গোলাম সাঈদ খান।
বেসিক ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক জনাব গোলাম সাঈদ খান আরো বলেন, ঋণ নেবার সময় প্রকল্প এলাকা হিসেবে দেখানো হয়েছে মীরপুর ও মোহাম্মদপুর। মোট ছয়টি প্রকল্প দেখিয়ে নেয়া হয় ঋনের অর্থ। এখন সব মিলিয়ে ব্যাংকের পাওনা ১৩৬ কোটা টাকা হলেও ফেরত দেয়নি একটি টাকাও।
ঋণ জালিয়াতির ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহের জন্য উক্ত অন লাইন গ্রুপের অফিসে গেলে তাদের ল্যান্ড ম্যানেজার আজাদ কিছু জানেন না বলে জানান এবং ক্যামেরা বন্ধ্য করতে বলেন। পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত তথ্যের জন্য বেসিক ব্যাংকে গেলে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী আজমল বারী বলেন তিনি সাংবাদিককে কোন তথ্য দিবেন না। তিনি আরো বলেন আপনারা কি ভাবে এসেছেন আমি জানি কিন্তু আমি ব্যাংকে ৩৫ বছর কাজ করেছি তাই আমার কাছ থেকে কোন ধরনের তথ্য আপনারা পাবেন না।
বেসিক ব্যাংকের মহাব্যবস্থাপক গোলাম সাঈদ খান আরো বলেন, ৩টি আলাদা প্রতিষ্ঠানের আঁড়ালে ঋন গুলি অনুমদন করেন ব্যাংকটির তথকালিন চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বাচ্চু, যাতে ব্যাক্তি হিসেবে রয়েছে খান মোহাম্মদ আক্তারুজ্জান পিতা- খান মোহাম্মদ আয়ূব আলী, প্রকৌশলী শাকিল আহম্মেদ খান, পিতা – আব্দুস সামাদ খান এবং সাজেদা আক্তার পপি, পিতা- সিরাজুল ইসলাম। অনলাইন গ্রুপের ব্যাবসা ব্যানিজ্য সবি চলছে, সাথে অন লাইন গ্রুপের মালিক আক্তারুজ্জানের বিলাসি জীবন, কয়েক কোটি টাকা দামের গাড়ি, দামি বাড়ি, একাধিক ফ্ল্যাট ও জমি সেই সাথে নতুন নতুন ক্ষাতে বিনিয়োগও চলছে, কিন্তু গত প্রায় ১৩ বছরে একটি টাকাও ঋণ পরিষদ করেন নি এবং পুরো টাকাই লুট বা আত্মসাধ করেছেন।
জনাব গোলাম সাঈদ খান আরো জানান যেহেতু গত প্রায় ১৩ বছরেও ব্যাংকের দেনা পরিশোধের চিন্তা করেনি তাই অর্থ আদায়ে বেসিক ব্যাংক অর্থ ঋণ আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নীতিমালায় ইচ্ছাকৃত খেলাফি ঋণের তালিকায় যাবে মামলাটি। তিনি আরো বলেন ঋণ আদায়ে আমরা গ্রাহকের সাথে বহুবার দেনদরবার করেছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি তাই মামলা হয়েছে এবং সেই মামলা ইতিমধ্যে রায় প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এই ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে তথ্য সংগ্রহের বিষয়টি টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে দুই দিনের মধ্যে জনাব আক্তারুজ্জান ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ করেন এবং বলেছেন যে ব্যাংকের লোন উনি পরিশোধ করতে চান কিন্তু পাশাপাশি সেখানে আবদার করেছেন সামান্য অর্থ দিয়ে ঋণটি যেন পুনঃ তফসীল করা হয়।
এদিকে আবাসন ব্যবসায়ীরা বলছেন কিছু অসাধু আবাসন ব্যবসায়ীদের কারনে পুরো আবাসন খাতটি ঝুকির মধ্যে পড়ছে এবং গ্রাহকের আস্থাসঙ্কট হচ্ছে। আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহাবের সিনিয়র সহ সভাপতি জনাব লিয়াকত আলী ভূইয়া বলেন, অসাধু ব্যবসায়িদের কারণে আমাদের বদনাম হয়। কিছু ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এই রকম দুই নাম্বারি লোন পাস হয়, পরে দেখা যায় ব্যাংকের লোন পরিশোধ করে না। ব্যাংক যদি গ্রাহকদের সঠিক ভাবে লোন দিতো তাহলে সমপরিমাণ বা তার থেকেও বেশি মূল্যের একাধিক ফ্লাট বা জমি বন্ধক হিসেবে থাকতো এবং তখন লোন ঠিকই পরিশোধ পেতো।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, কেবল অর্থ আদায় নয়, যারা এক সময়ের সফল বেসিক ব্যাংকে প্রায় অচল করেছে তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া দরকার যা দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। অনেক ক্ষমতাশীল ব্যাক্তি আছেন ব্যাংকে যারা এক সময় একটি চীরকুট লিখে দিত অমুক কে এতো টাকা দিন, পরে বোর্ড মিটিং এ দেখছি। এটাকে তো আর ঋন বলা হয় না। এরা একটা পতারক চক্র এদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত শাস্তি দেওয়া হক।
স্থানীদের সাথে কথা বলে জানা যায় যে – অন লাইন গ্রুপ বা খাঁন মোহাঃ আক্তার শুধু যে ব্যাংকের ১৩৬ কোটি টাকাই আত্মসাধ করেছেন তা নয় বরং নিজের শস্ত্রাসী বাহিনী ও কিশোর গ্যাং দিয়ে জোরপূর্বক অন্যের জমি দখল, শহীদ পরিবারের বাড়ী দখল, বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারি চাকুরী জীবী যারা যৌথভাবে নিজেদের একটি বাড়ি নিজেরাই নির্মাণ করতে চান তাদের নামে মিথ্যা মামলা দিয়ে হেরেজমেন্ট করা ও ভয়ভীতি দেখানো এবং অন-লাইন গ্রুপের অপকর্মে কেউ বাধা দিলে নিজ সন্ত্রাসীদের দিয়ে হামলার করান। একই সাথে অবৈধ ভাবে সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ, অন্যায় ভাবে মানুষ কে ভয় ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি সহ আরো বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে। যা নিয়ে দূর্নিতী দমন কমিশন সহ সরকারি সংস্থা গুলি এখন তৎপর।
এই ধরনের পতারক রা দেশের টাকা লোপাট করছে। এদের কঠিন সাস্তি হওয়া দরকার।