মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২০ পূর্বাহ্ন
Headline
নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় ইউএনও এর নেতৃত্বে ধুমপান তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ আইন এর উপর মোবাইল কোর্ট পরিচালিত সুনামগঞ্জের দিরাইয়ের ডাঃ রসেন্দ্র কুমার তালুকদার আর নেই। খুলনায় ছু/রি/কা/ঘা/তে র’ক্তা’ক্ত আজিজ— খুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি, তদন্তে পুলিশ কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের ৬ আইনজীবী কারাগারে শ্রীপুর থানার ওসির ব্যবসাকে কেন্দ্র করে মোটোফোনে ঘুষ চাওয়ার অডিও ভাইরাল ছাত্রদল নেতা পারভেজ হত্যার প্রতিবাদে মাটিরাঙ্গায় মানববন্ধন কুমিল্লা নগরীতে ঝটিকা মিছিল, আটক ৮ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী কালিয়াকৈরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে সাংবাদিক শাহিনুর ইসলাম শাহিন এর নামে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত। রাণীশংকৈলে আওয়ামী লীগের পাঁচ নেতা কর্মী বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার
Headline
Wellcome to our website...
ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত হোসেনপুরের সুঁই সুতা শিল্পীরা
/ ২৩ Time View
Update : সোমবার, ১৭ মার্চ, ২০২৫, ৬:৫১ পূর্বাহ্ন

ঈদকে ঘিরে ব্যস্ত হোসেনপুরের সুঁই সুতা শিল্পীরা

আশরাফ আহমেদ, হোসেনপুর, কিশোরগঞ্জ:

আর মাত্র দুই সপ্তাহের পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। এই ঈদকে ঘিরেই মার্কেট ও বিপনি বিতনে বেড়েছে ক্রেতাদের সমাগম। শিশু -কিশোর বয়োবৃদ্ধসহ সকলেই নতুন পোশাকে কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত। তাই
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে আকর্ষণীয় ও মনোরম ডিজাইনের পুঁতি ও সুতা দিয়ে শাড়িতে বাহারি রঙের নকশার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রাম-গঞ্জের দরিদ্র নারী ও শিশু শাড়ি শিল্পীরা। অর্থ উপার্জনের জন্য তারা রাত-দিন একটানা শাড়িতে নকশার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেখে মনে হয় যেন দম ফেলার ফুরসত নেই তাদের।
সরেজমিনে উপজেলার কুড়িমারা, রহিমপুর, আশুতিয়া, দ্বীপেশ্বরসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি বাড়িতে এখন পুরোদমে শাড়িতে পুঁতি ও সুতা দিয়ে বাহারি রঙের শাড়িতে বিভিন্ন নকশার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন নারীরা। এ শাড়িগুলো ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের ব্যবসায়ী ও মহাজনদের কাছ থেকে বিভিন্ন ডিজাইন আঁকা নামমাত্র মজুরির চুক্তিতে আবদ্ধ হয় নারী শিল্পীরা। এরপর শাড়িতে দরিদ্র পরিবারের নারী ও শিশু শিল্পীরা মিলে শাড়ির ডিজাইন মতো সুতা ও পুঁতি দিয়ে নকশা প্রস্তুত করে থাকে। যেসব শাড়িতে ডিজাইন বেশি থাকে, সেসব শাড়ি নকশা তৈরিতে দুই থেকে তিন দিন সময় লাগে। একেকটা শাড়ির ডিজাইন ও প্যাটার্ন ভিত্তিক মজুরি ভিন্ন হয়ে থাকে। বেশি ডিজাইনকৃত শাড়িতে নকশার মজুরি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা ব্যবসায়ীরা শাড়ি শিল্পীদের দিয়ে থাকে। ওই সব শাড়ি রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন নামীদামি মার্কেটের দোকানগুলোতে বিক্রি হয়ে থাকে।

ওই শাড়িগুলো খুচরা বিক্রেতারা আট থেকে ১৫ হাজার টাকায় বিক্রি করে থাকে। উপজেলার দ্বীপেশ্বর গ্রামের নকশা কারিগর রহিমা খাতুন বলেন, সংসারের দিনমজুর স্বামীর পক্ষে ছেলেমেয়ের লেখাপড়ার খরচ ও খাবার জোগাড় করা কষ্টসাধ্য ছিল। ফলে বাড়তি কিছু উপার্জনের জন্য শাড়ির নকশাতে কাজ করছি। এইসব শাড়ির কাজে যে মজুরি পাই তা অতি সামান্য। শাড়ির ব্যবসায়ী ও মহাজনরা শাড়িগুলো অনেক বেশি দামে বিক্রি করে অথচ আমরা ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। শাহেদল গ্রামের শাড়িতে নকশাকর্মী হনুফা বলেন, পারিবারিক অস্বচ্ছলতার দরুন শাড়িতে কাজ করি। শাড়িতে কাজ করে যা পাই তা দিয়ে কোনোমতে সংসার চালাতে পারছি। কুড়িমারা গ্রামের নকশাকর্মী বিলকিস বলেন, অভাবের তাড়নায় শাড়ির কাজ করি। তবে মহাজনরা যদি আরো বেশি মজুরি দিত, তাহলে ভালোভাবেই সংসার চালাতে পারতাম। উপজেলার আশুতিয়া গ্রামের সখিনা বেগম জানান, কাঠের ফ্রেমের শাড়ির কাপড় লাগিয়ে তাদের চুন দিয়ে অঙ্কিত ডিজাইনের চুমকি, পুঁতি ও পাথরের গায়ে লাগিয়ে শাড়িকে আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দন করি। দু-তিনদিন একটি সারিতে চুমকি ও পাতলা কোনো কাজ শেষ করা যায়। আগে শাড়ি প্রথম ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করে দেয়া হতো যাতে তার কিছু টাকা সঞ্চয় করা যেত। বর্তমানে বাজারে চুমকি লাগানো শাড়ির চাহিদা থাকলেও দাম কিছুটা কমানো যায়। শাড়ি প্রতি মজুরি পাচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এ জন্য তারা সুঁই-সুতার কারিগরদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিতের দাবি জানায়।

জানা যায়,হোসেনপুরে শাড়িতে পুঁতির কাজ করে কয়েক হাজার নারী স্বাবলম্বী হয়েছে। সংসারের অভাব দূর করে তাদের অনেকেই ছেলেমেয়েকে শহরে রেখে লেখাপড়া করাতে পারছেন। উপজেলার নিম্ন-মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র সহস্রাধিক নারী শাড়িতে পুঁতি চুমকি ও পাথর বসানোর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির অতিষ্ঠ হয়ে কাজের অভাবে এবং একবেলা খেয়ে দুবেলা উপোস থাকে এমন সব পরিবারের মেয়ে ও বধূরা শাড়িতে হাতের কাজ করে তিনবেলা খাবারের সুব্যবস্থার পাশাপাশি সংসারের অভাব মোচন করে স্বাবলম্বী হতে চলেছে।
ঢাকার শাড়ির ব্যবসায়ী রেনু মিয়া জানান, পুঁতি-সুতার মূল্য বেশি, পরিবহন খরচ ও আনুষঙ্গিক ব্যয়ে তাদের খুব বেশি লাভ থাকে না। তাই সুঁই-সুতার কারিগরদের পারিশ্রমিক বাড়ানো আপাতত সম্ভব নয়। তবে তিনি এ খাতে আরো বেশি সরকারি পৃষ্টপোষকতার দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা নারী উন্নয়ন কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে উপজেলা অফিস সর্বক্ষণ কাজ করে যাচ্ছেন।

আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
Our Like Page