

সরকারি কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ নেএীর পক্ষে সুপারিশ করলেন বিএনপি নেতা।
পঞ্চগড় প্রতিনিধি মো আরিফুল ইসলাম ইরান
পঞ্চগড় জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চুর বিরূদ্ধে সরকারী কাজে বাঁধা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। একই সাথে সরকারী কর্মকর্তার সাথে অশালীন আচরনেরও অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত ভাবে এই অভিযোগ করেন ।
অভিযোগ সূত্রে জানাগেছে সদর উপজেলার মিরগড় এলাকায় প্রায় ১২ একর খাস জমির উপর একটি ইকো পার্ক স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন।। গত দুই মাস থেকে পর্কটির বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ, ফুল ফলের বাগান এবং সৌন্দরর্য্যবর্ধনে নানা রকম কাজ চলছে। একই সাথে ইকো পার্কের পাশে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত আরএস ১ নং খতিয়ানের ৬৬৯৬ দাগে পতিত ০.০৩৬৮ একর পরিমাণ জায়গায় ০৮(আট) টি দোকান ঘরও নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ইকো পার্কের পাশে আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত দুস্থ গরীবদের কে এই দোকানঘর গুলো বরাদ্দ দেয়ার উদ্যোগ নেয় জেলা প্রশাসন। পার্কটিতে প্রবেশ পথের দক্ষিণ পাশে এই দোকানঘরগুলোর নির্মাণের সময় গত ০৪ এপ্রিল জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু নির্মান শ্রমিকদেরকে ঘর নির্মাণে বাধা প্রদান করেন। ঘটনা শুনে এসময় নির্মাণ কাজের পরিচালনায় দায়িত্বরত কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল সুলতান জুলকার নাইন নির্মানাধীন দোকান ঘরের কাছে যায়। এ সময় ওই বিএনপি নেতা দোকান ঘর নির্মান কাজ বন্ধ রাখতে বলেন। এসময় ওই জমির কিছু অংশ নিজের বলে দাবি করেন ওই বিএনপি নেতা। এসময় তিনি চিৎকার চেচামেচি শুরু করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সরকারি জমিতেই ঘর নির্মাণ করার কথা বোঝানোর চেষ্টা করলেও তিনি নানা ধরনের হুমকি প্রদান এবং অশালীন আচরন শুরু করেন। পরে আরও দুই দিন ঘর নির্মাণ করার কাজে হাত দিলেও তার লোকজন এসে বাধা প্রদান করে। পরে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করা হয়। এখন পর্যন্ত ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল সুলতান জুলকার নাইন জানান সরকারি জায়গায় সরকারী দোকান নির্মানে বাধা দিয়েছেন বিএনপি নেতা জাহিরুল ইসলাম। এসময় তিনি আমার সঙ্গে অশালীন আচরনও করেছেন। অভিযোগের পর পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছেন। বিএনপি নেতা জাহিরুল ইসলাম কাচ্চু জানান, পার্কে প্রবেশের রাস্তার ধারেই আমার জমি রয়েছে। জেলা প্রশাসন যেখানে ঘর তুলছে সেই স্থানে মাপের একটু সমস্যা রয়েছে। তাই দোকানঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। এখানে বাঁধা দেয়ার কিছু নেই। কর্মকর্তাকে হুমকি বা তার সাথে অশালীন আচরনের কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন এটা মিথ্যা কথা বলেছেন তিনি। হুমকি বা অশালীন আচরনের প্রশ্নই আসেনা ।
জেলা প্রশাসক মো: সাবেত আলী জানান, জেলায় সরকারি কোন পার্ক না থাকায় জুলাই বিপ্লবের পর পঞ্চগড় জেলাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে মিড়গড় ইকো পার্ক স্থাপনের উদ্যেগ নেয় জেলা প্রশাসন। পার্কের পাশেই একটি আশ্রয়ন প্রকল্প রয়েছে। এই আশ্রয়ন প্রকল্পের দু:স্থ গরীব মানুষদের পার্কের সাথে সংযুক্ত করে তাদের কর্মসংস্থানের জন্য ৮ টি দোকান ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু বিএনপির আহ্বায়ক কাজ বন্ধ রাখতে বলেছে বলে শুনেছি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ লিখিত পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে বিএনপি এই নেতার বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদ আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দকে পুনর্বাসনের অভিযোগও উঠেছে । সম্প্রতি জেলা মহিলা সংস্থা প্রদত্ত বিশিষ্ট নারীদের জয়িতা সম্মাননা প্রদানের জন্য তিনি জেলা কৃষকলীগের নারী বিষয়ক সম্পাদক আকিমুন নাহার পিয়ার নাম লিখিত ভাবে সুপারিস করেন। এ নিয়ে জেলা বিএনপিতে তোলপাড় শুরু হয়। অনেকে এ ঘটনার প্রতিবাদও করেন।