
শরীয়তপুরের জাজিরায় বিধবার জমি দখলের অভিযোগ
উঠেছে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে
জুয়েল মিয়া
বাংলাদেশ রিপোর্টার
শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পৌরসভার আহাদি মাদবরের কান্দির নাজমা আক্তার (৪৬) নামে অসহায় এক বিধবার জমি জোরপূর্বক দখল করে এস্কেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি ভরাট করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী কয়েক জনের বিরুদ্ধে অভিযুক্তরা হলেন অভিযোগকারি নাজমা আক্তারের প্রতিবেশী নুরু মাদবরের তিন ছেলে লুৎফর মাদবর (৪৮), আক্তার মাদবর (৩৫), আউয়াল মাদবর (৩০) ও মৃত আব্দুর রব মাদবরের ছেলে ইদ্রিস মাদবর (৫০)। এদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগী নাজমা
অভিযোগ কারি ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায় জাজিরা পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডের আহাদি মাদবর কান্দি এলাকার মৃত কালু মাদবরের ছেলে মৃত মজিবর মাদবরের স্ত্রী ভুক্তভোগী নাজমা ও মজিবর দম্পতির পাঁচ মেয়ে মজিবরের কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় কালু মাদবর তার মোট সম্পত্তি ৪ একর ৮৩ শতাংশ থেকে নিজের ছেলে মজিবর মাদবরকে ৪ একর ৪ শতাংশ জমি দলিল করে দেন। কালু মাদবর মারা যাওয়ার পর, মজিবর মাদবরের মৃত্যুর আগে নিজের নামে পাওয়া সে ৪ একর ৪ শতাংশ জমি তার নিজ স্ত্রী নাজমা আক্তারকে দলিল করে দিয়ে যান।
স্বামীর মৃত্যুতে অসহায় হয়ে পরেন নাজমা আক্তার। তার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী লুৎফর, আক্তার, আউয়াল ও ইদ্রিস মাদবর মিলে নাজমা আক্তারের দলিল মূলে দখলকৃত আহাদি মাদবর কান্দি মৌজার বিআরএস ৮৫, ৭৬, ২৩৪, ৭১, ৮০, ২৯৭, ৩০২, ৩১২, ২৪৯, ৩২৬, ৩৭৬ ও ৮৬ নং দাগে বেশ কিছু জমি জবর দখল করার উদ্দেশ্যে এস্কেভেটর (ভেকু) মেশিন দিয়ে মাটি ভরাটের চেষ্টা করে। বিষয়টি নিয়ে আদালতের মাধ্যমে ১৪৪/১৪৫ ধারা জারি করেন ভুক্তভোগী নাজমা আক্তার।
বিগত প্রায় ১ বছর আগে (গত ৩১-ডিসেম্বর) এই জমিতে নাজমার চাষাবাদ করা ফসলে লাঙ্গল দিতে গেলে বাধা প্রদান করেন নাজমা। সে সময় নাজমা আক্তারকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জমিতেই ফেলে রাখে অভিযুক্তরা। বছর না পেরুতেই সে জমি পুনরায় দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীর।
স্থানীয় হালেম মাদবরের স্ত্রী রাসিদা বেগম জানান, এলাকায় যতো ঝামেলা যুক্ত জমি রয়েছে সব ওরাই কিনে। কিভাবে যেনো ভূয়া দলিল বানিয়ে জমি দখল করে। ঝামেলা পাকিয়ে পরে মোটা অংকের টাকা দাবি করে। এ জমি মজিবর তার স্ত্রী নাজমাকে দলিল করে দিয়ে গেছে। কিন্তু ওরা জোর করে সে জমি দখল করতে চায়।
অভিযুক্ত লুৎফর মাদবর বলেন, কালু মাদবরের মেয়েদের থেকে তিনি দশ শতাংশ জমি কিনেছেন। এইজন্য তিনি এ জমি দখল করেছে। কালু মাদবরের মেয়েরা জমি কোন দাগে বিক্রি করেছে বা তারা আপনাকে এই জমি বুঝিয়ে দিয়েছেন কি না? সে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমাকে বুঝিয়ে দিতে হবে কেনো? আমি তো জানি জমি কোনটা। মজিবর মাদবর আমার প্রতিবেশী। আমি জমিটা চিনি, তাই সে জমিই দখল নিয়েছি।
জাজিরা থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) মোঃ আব্দুস সালাম জানান, থানার পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে। নালিশী ভূমিতে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য আদালতের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যদি বিবাদীরা বাদীকে কোনো ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে থাকে, তেমন কোন লিখিত অভিযোগ পেলে, আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
